পুলক ঘটক
আমার বংশীয় পদবী ঘটক হওয়ায় মাঝে মাঝে মেসেঞ্জারে কিছু ঘটকালির অনুরোধ পাই। গত বৃহস্পতিবার পাওয়া এমন একটি মেসেজ আপনাদের শোনাই।
“দাদা, নমস্কার নিবেন। আমার ভাইয়ের জন্য একজন ভাল শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পাত্রী যদি মিলিয়ে দিতেন। আপনার প্রাপ্য মূল্য দিব।আমার ভাই বিএসএস পাশ। পাত্রের নিজের এলোপ্যাথিক ফারমেসি আছে। পাত্র খুব সুন্দর ফরসা এবং ভাল মনের। পাত্রের পূর্বের বউ খুব অসুস্থ। ডাক্তার বলেছেন যে কুনু সময় মারা যেতে পারে। কিডনি দুইটা ড্যামেজ, হার্টে পানি। পাত্রের দুইটা মেয়ে আছে, ১টা ৫ বছর আর একটা ৪ বছর। পাত্রের বয়স ২৯ বছর। পাত্রের ফ্যামিলি অল এডুকেটেড।”
কথাগুলো হুবহু ঠিক রেখে শুধু যদি জেন্ডার পরিবর্তন করে দেই কেমন হয়? পড়ুন, “পাত্রী খুব সুন্দর ফরসা এবং ভাল মনের। পাত্রীর বর্তমান স্বামী খুব অসুস্থ। ডাক্তার বলেছেন যে কুনু সময় মারা যেতে পারে। কিডনি দুইটা ড্যামেজ, হার্টে পানি। পাত্রীর দুইটা মেয়ে আছে, ১টা ৫ বছর আর একটা ৪ বছর। পাত্রীর বয়স ২৯ বছর। পাত্রীর ফ্যামিলি অল এডুকেটেড।”
আমাদের বউ মারা গেলে কবরের মাটি শুকানোর আগে পাত্রী সন্ধান শুরু হয়; বউ মারা না গেলেও হয়। অসুস্থ বউ নিজেই নিজের স্বামীর বিয়ে দিয়েছেন, এমন হলে তা নারী মাহাত্মের উন্নত পরাকাষ্ঠা হয়ে যায়! এই আমাদের মূল্যবোধ। এই দেশে দাঁড়িয়ে আমরা নারীর স্বাধীনতা ও সমঅধিকারের জন্য লড়াই করি। আমরা কেন গালি খাব না?
লেখক: সাংবাদিক; সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ