পুলক ঘটক: একটি কার্টুন চিত্র প্রকাশকে কেন্দ্র করে ২০০৭ সালে জরুরি আইন চলাকালীন দৈনিক প্রথম আলো এবং সাপ্তাহিক ২০০০ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছিল হিজবুত তাহরীরসহ কিছু মৌলবাদী সংগঠন। ঐ ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বায়তুল মোকারমের খতিবের কাছে গিয়ে মাপ চেয়ে এসেছিলেন। আর আমরা প্রগতিশীল সাংবাদিক ফোরাম কামাল লোহানীর নেতৃত্বে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলাম।
কামাল লোহানী ছাড়া সে সময় আর কারও দ্বারা এটা সম্ভব ছিলনা। লোহানী ভাইয়ের সভাপতিত্বে ২০০৭ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখ “সাংবাদিকতার মর্যাদা” শিরোনামে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল সাংবাদিক নেতা অংশ নিয়েছিলেন।
ছবিতে লোহানী ভাইয়ের এক পাশে বরেণ্য সাংবাদিক কেজি মুস্তফা এবং আরেক পাশে আমাকে দেখা যাচ্ছে। এই স্মৃতি অমোচনীয়। লোহানীভাই ছিলেন প্রগতিশীল সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক এবং আমি ছিলাম সদস্য সচিব। (ডেইলি নিউ এজ পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি।)
১৯৭১ সালে কামাল লোহানী ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। ৭১’র ২৫ মার্চ ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা শুরুর মাত্র দুই দিন আগে ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কামাল লোহানীদের নেতৃত্বে সাংবাদিক ইউনিয়ন সেনাবাহিনীর সংবাদ বয়কট করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।
লোহানী ভাই তখন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। তার পত্রিকার দুই সাংবাদিক আশরাফুজ্জামান খান এবং চৌধুরী মঈনুদ্দিন আল বদরদের নিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যায় যুক্ত হয়েছিলেন। কামাল লোহানী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশত্যাগ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যুক্ত হয়েছিলেন। সাংবাদিকতা পেশায় এবং প্রগতিশীল আন্দোলনে আজ আমরা অভিভাবক হারালাম। লাল সালাম কামাল লোহানী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক কামাল লোহানীর জন্ম ২৬ জুন, ১৯৩৪। মৃত্যু: ২০ জনু, ২০২০।।
[পুলক ঘটক; সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ]
⇒ ফেসবুক পেজ, ফেসবুক প্রোফাইল, টুইটার অ্যাকাউন্ট
⇒বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের ফেসবুক গ্রুপ