হিন্দু আইনে নারীর সমান অধিকার দাবি

ঢাকাটাইমস: উত্তরাধিকারসহ সব ক্ষেত্রে নারী ও লিঙ্গবৈচিত্রময় জনগোষ্ঠীকে সমান অধিকার দেওয়ার দাবি বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের। প্রচলিত হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার করে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও সমমর্যাদার দাবি জানানো হয়েছে।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের প্রথম জাতীয় সম্মেলন থেকে এই দাবি জানানো হয়। হিন্দু আইন সংস্কার আন্দোলনের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৩তম জন্মজয়ন্তীর যুগপৎ আয়োজন হিসেবে এ সম্মেলনের মূলভাব নির্ধারণ করা হয়েছিল ‘বিদ্যাসাগরের পথ ধরে’। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘ভারতের হিন্দু আইনে পুরুষদের বহুবিবাহ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও হিন্দু পুরুষরা যতগুলো ইচ্ছা বিয়ে করতে পারেন। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব সরকার এ দেশের মুসলিম আইনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ও অগ্রগতি সাধন করলেও আজ অবধি হিন্দু আইন সংশোধন হয়নি। এই আইনের আওতাভুক্ত সব নারী ও লিঙ্গবৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী নিদারুণ বৈষম্যের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছ। শুধু নারী হয়ে জন্মানোর কারণে কেউ পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়, যা আধুনিক পৃথিবীতে এক অবিশ্বাস্য সত্য এবং তা কেবল বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য। ভারত ও নেপালসহ পৃথিবীর সব দেশের হিন্দু আইনে নারী-পুরুষ সমান অধিকার পায়।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মিলন কান্তি দত্ত বলেন, ‘হিন্দু আইন সংস্কারের বিরোধিতা করার কোনো যুক্তি নেই। যারা বিরোধিতা করছে তারা একদিন তাদের ভুলের জন্য আপশোস করবে।যারা হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন আইনের বিরোধিতা করেছিল এখন তারাই বিবাহ নিবন্ধনের জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে ঘুরে। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।’

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু। আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি সুভাষ সাহা ও রিনা রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নীরু বড়ুয়া, কোষাধ্যক্ষ পুলক রাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভুপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্ণা বাড়ই, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহযোগী সংগঠন মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দীপালি চক্রবর্তী, অশোক ধর, সুতপা বেদজ্ঞ, চিত্তরঞ্জন ভট্টাচার্য, প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, মহিলা পরিষদের আইনজীবী দিপ্তি শিকদার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সম্মেলনে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে অধ্যাপক ময়না তালুকদারকে সভাপতি এবং পুলক ঘটককে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ভানুলাল দাস, রিনা রায়, সাংবাদিক সুভাষ সাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. নীরু বড়ুয়া, জাতিসংঘের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলক রাহা, বিশিষ্ট বায়োকেমিস্ট গোকুল কৃষ্ণ পোদ্দার ও বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী সহ-সভাপতি পদে, এডভোকেট প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস যুগ্ম সম্পাদক পদে এবং মনোবিজ্ঞানী মিতা রায় চৌধুরী কোষাধ্যক্ষ্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন।এছাড়াও কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত ১১জনকে ৭১ সদস্যের বাকি পদগুলো আগামী একমাসের মধ্যে পুরণ করার এক্তিয়ার প্রদান করে।

সকৃতজ্ঞ স্বীকৃতি⇒ ঢাকাটাইমস

ওয়েবসাইট⇒ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ

ফেসবুক গ্রুপ লিংক⇒ হিন্দু আইন সংস্কার চাই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_img
spot_img

বাছাইকৃত

বিশেষ নিবন্ধ