পুলক ঘটক
মানুষ জগৎ না দেখেই আপন ক্ষুদ্র জগৎ নিয়ে গর্ব করে। না জেনেও গর্ব করে, আবার নিজের ক্ষুদ্রতা জেনেও গর্ব করে। প্রতিবেশীর উচ্চতার কাছে নিজের তুচ্ছতা প্রকাশ হয়ে পরলে কখনো তা ঢেকে রাখার চেষ্টা করে; কখনো আবার সেই তুচ্ছতা নিয়ে বড়াই করে। নয়তো প্রতিবেশীর প্রতি ঈর্ষাকাতর হয়।
অহেতুক অহঙ্কারই মনে হয় মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এবং মহত্ত্ব বিকাশের বড় প্রতিবন্ধক। কাদা সরানোর পরিবর্তে মানুষ যখন নিজের সৃষ্ট কাদায় পিছলে চলাকে গর্বের মনে করে, প্রগতির মহাসড়ক তার জন্য দূরবর্তী হয়। যে সব জাতি আপন সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার কর্দমে পিছলে চলতে গর্ববোধ করে বাঙালি তার অন্যতম।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, “আশ্চর্যের বিষয়, কি করে ভগবান ৪ কৌটি বাঙালির মধ্যে একটি মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন।” আজ আমারও বিষ্ময় লাগে!
তবুও বিশ্বাস করি, সকল বিষ্ময় ঠেলে আপন কাদায় পিছলে চলা বাঙালির মাঝ থেকেই আরও বহু বিদ্যাসাগর জন্ম নেবে। বহু মানুষ জন্ম নেবে, বার বার জন্ম নেবে -যেমন জন্ম নিয়েছিলেন রবিন্দ্রনাথ নিজেও।
মহাপুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়ের ২০৩তম জন্মজয়ন্তিতে (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রণতি জানাই।
[লেখক: সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ]
⇒লেখকের ফেসবুক পেজ, ফেসবুক প্রোফাইল, টুইটার অ্যাকাউন্ট
⇒বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের ফেসবুক গ্রুপ