পুলক ঘটক
হিন্দুদের মধ্যে অসবর্ণ বিবাহ এখন কিছু কিছু হচ্ছে। ব্রাহ্মণের ছেলে শূদ্রের মেয়ে বিয়ে করছে, আবার শূদ্রের ছেলে ব্রাহ্মণের মেয়েকে বিয়ে করছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান হিন্দু আইন অনুযায়ী এই বিবাহগুলো অবৈধ। অবৈধ বিয়ে মানে ঐ নর-নারীর মেলামেশা অবৈধ। লিভ ইন বা লিভ টুগেদার যে রকম, তাদের একত্রে বাসও সেরকম। কারণ তাদের বিয়ের আইনগত বৈধতা নেই।
অবৈধ বিয়ের তথা অবৈধ সম্পর্কের সন্তানও অবৈধ হয়। হিন্দু আইনে অবৈধ সন্তানের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার নেই। সুতরাং এ ধরনের বিয়ের ফলে যেসব সন্তান উৎপাদিত হচ্ছে তাদের শরিকরা যদি কেউ আইনি পন্থায় তাদের সম্পত্তির অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে তবে সমস্যা আছে।
ইংরেজরা তাদের ২০০ বছরের শাসনের শেষ পর্যায়ে (ভারত উপমহাদেশ থেকে চলে যাওয়ার অল্পদিন আগে) ১৯৪৬ সালে Hindu Marriage Disabilities Removal Act, 1946 নামে একটি আইন প্রণয়ন করে গেছে। আইনটি এখনো বাংলাদেশের হিন্দু আইন হিসেবে চালু আছে। ঐ আইন অনুযায়ী অসবর্ণ বিয়েকে বৈধতা দেওয়া হয়নি। শুধু একই বর্ণের মধ্যে যেসব উপবিভাগ আছে তার মধ্যে পারস্পরিক বিয়েকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
এখন বলুন, অসবর্ণ বিয়েকে আইনগত বৈধতা দেওয়া উচিত কিনা? নাকি এধরনের বিয়েগুলো অবৈধ হিসেবে থাকা উচিত? যারা হিন্দু আইনকে ‘ধর্ম’ বলছেন এবং এসব আইনের দাড়ি কমা সেমিকোলন কিছুই বদলাতে দেবেন না তাদের কি মত? আরেকটি প্রশ্ন: বিবাহ সংক্রান্ত আইন Hindu Marriage Disabilities Removal Act, 1946 কে প্রণয়ন করেছে? সে কি ভগবান? এই হিন্দু আইন কি সনাতন ধর্ম?