সুরঞ্জিত দাস
অভিধানে “দাস” শব্দের অর্থ সেবক, সেবায়েত পাওয়া যায়। আমরা যে নামের শেষে টাইটেল হিসেবে “দাস” শব্দটা লিখি, এটা তো আমি মনে করি আমাদের জন্য গর্বের।
এখানে দাস শব্দটাকে ঈশ্বরের সেবক অর্থে বোঝানো হয়েছে। ঈশ্বরের সেবক তো সবাই হতে পারে না। যিনি হতে পেরেছেন তিনি নিশ্চয়ই আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং আনন্দের। কারণ এই দাস (সেবক) র উছিলায় যদি ঈশ্বরের কাছাকাছি পৌঁছানো যায়, ঈশ্বরকে পাওয়া যায়, তাহলেই বা সেটা কম কিসের?
জেনে হোক, আর না জেনে হোক আমরা সবাই ঈশ্বরের দাস হওয়ার জন্যই ধার্মিক হই। ধর্মের জন্য এত সময় এবং অর্থ ব্যয় করি। আর এজন্যই সাধু, সন্ন্যাসী এবং ব্রহ্মচারীরা নামের শেষে দাস শব্দটা প্রয়োগ করে থাকেন। বিশেষ করে ইসকনে দীক্ষিত হতে গেলে আপনাকে নামের শেষে “দাস” বা দাসী শব্দটা প্রয়োগ করতে হবে এবং করা বাধ্যতামূলক।
পৃথিবীতে রাজা, উজির, মুচি, মেথর, ব্যবসায়ী, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রীয়, বৈশ্য আমরা সবাই ঈশ্বরের দাস। এই সত্যটা কেউ স্বীকার করতে চায় না, বুঝেও বুঝতে চায় না। আবার অনেকেই বুঝেও না বুঝার ভান করে কথিত দাস টাইটেলধারিদের অবজ্ঞা করে। ঈশ্বরের দাস (সেবক)কে অবজ্ঞা করা মানেই ঈশ্বরকে অবজ্ঞা বা অপমান করা।
যারা পৈতৃক সূত্রে দাস টাইটেল পেয়েছেন, তাদের হীনমন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই। বুঝতে হবে আপনার পূর্বপুরুষদের মধ্যে কেউ ঈশ্বরের দাস বা সেবক ছিল। তবে ব্যক্তিগতভাবে টাইটেল নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই। আমার কাছে কর্ম এবং গুনই আসল। কর্ম এবং গুণে আমি বিশ্বাস করি।
আমাদের সকলের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
লেখক: সমাজকর্মী