হিন্দু আইন সংস্কার বনাম মন্দির প্রাঙ্গণে শৌচাগার 

রাজেশ কুমার কানু

শিরোনামটা একটু অন্য রকম লাগছে? লাগাটাই স্বাভাবিক। তবে লেখাটা পড়লে সংশয় কেটে যাবে৷
আসুন সকলে মিলে এবার আমাদের প্রাচীন মন্দিরগুলোর দিকে তাকাই। প্রাচীন মন্দিরগুলোর অবকাঠামোর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে মন্দিরের সীমানার মধ্যে কোনো প্রকার শৌচাগার নেই। প্রাচীন এমন কোনো মন্দির দেখা যায় না যেখানে মন্দিরের দর্শনার্থীদের জন্য শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। আসলে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা মন্দিরের পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ রাখার নিমিত্তে এমনটা করেছেন। যা অবশ্যই শাস্ত্র সম্মত।
এবার একটু আধুনিককালে নির্মিত মন্দিরগুলোতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করা যাক। এবার দেখা যাবে মূল মন্দিরের সাথে বা পাশেই শৌচাগার রয়েছে। প্রায় প্রতিটি মন্দিরের চিত্র একই। আধুনিক কালের মন্দিরের সাথে শৌচাগার নির্মাণ কিন্তু শাস্ত্র বিরুদ্ধ তবে সময়ের প্রেক্ষাপটে সঠিক। কারণ এখন মানুষ সভ্য হয়েছে। আগের মতো মানুষ খোলা জায়গায় বা ঝোপঝাড়ে শৌচকর্ম করে না। তাই সময়ের সাথে সংগতি রেখে এই যুগোপযোগী পরিবর্তন এসেছে।
তারমানে মানুষ সময়ের হাত ধরে ধর্মেরও আধুনিকায়ন করছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। সনাতন ধর্মে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার বিধানও রয়েছে। এমন হাজারো উদাহরণ দেওয়া সম্ভব যে ধর্মের অনেক বিধান আধুনিকায়ন হয়েছে।
তাহলে সময়ের প্রেক্ষাপটে যদি মন্দিরে শৌচাগার নির্মাণ করা যায় তাহলে ইংরেজদের প্রণীত হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার করে আধুনিকায়ন করতে সমস্যা কোথায়? সব কিছু সময়ের সাথে আধুনিক হবে আর হিন্দুদের পারিবারিক আইন সেই মান্ধাত্যার আমলেই পড়ে থাকবে?
এমনটা আর হতে দেওয়া যাবে না। হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার চাই। এর এই দাবি সময়ের দাবি। আর সময়কে কেউ কোনো কালে বাঁধতে পারেনি আর পারবেও না।
লেখক: শিক্ষক ও সমাজকর্মী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_img
spot_img

বাছাইকৃত

বিশেষ নিবন্ধ