হিন্দু পারিবারিক আইন সংস্কার ও নারীর নিরাপত্তা

কাল একজন পোস্ট করলো আইন সংস্কার হলে কি কি সমস্যায় পড়বে হিন্দু সমাজ ۔কিন্তু কিছু লোভী পুরুষের রা ভাবে না কি কি সুবিধা ভোগ করবে আমাদের হিন্দু নারীরা ۔যেমন۔۔

*বাল্য বিবাহ এর মতো রাষ্ট্রীয় অপরাধ অনেকাংশেই কমে যাবে , কারণ রেজিস্ট্রিকৃত বিয়েতে বয়স নির্ধারণ একটা ফ্যাক্টর ۔বাল্য বিবাহে একটা নারীর অনেক ধরণের শারীরিক মানসিক ,অকাল মৃত্যুর মতো যে অসুবিধা গুলো হয় ওগুলোর পরিবর্তে নারীদের জীবন যাপন অনেক বেশি সহজ ও বেঁচে থাকার গড় বয়স বেড়ে যাবে ۔
##রেজিস্ট্রি হওয়ার ফলে প্রত্যেকটা মেয়ের মধ্যেই একটা অনিশ্চয়তা কেটে যাবে যে স্বামীদেবতা যদি তাকে ফেলে অন্য কাউকে বিয়ে করতে চায় সে অন্তত হিন্দু আইনে না রাষ্ট্রীয় আইনে সুবিচার পাবে ۔যার ফলে পুরুষের বহু বিবাহ করার চিন্তা টা মাথা থেকে চলে যাবে ۔

##যৌতুক প্রথার মতো নোংরা একটা মহাব্যাধি অনেকাংশেই কমে যাবে ۔
##বিয়েতে অহেতুক 300/400 লোকজন কে খাওয়ানোর পরিবর্তে অল্প খরচে মন্দির ভিত্তিক বিয়েতে সবাই আস্তে আস্তে ঝুঁকবে ۔
##মেয়েদের ধর্মান্তরিত হওয়ার হার অনেক কমে যাবে ۔কারণ ধর্মান্তরিত হলেই পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সব সম্পত্তি বাতিল হওয়ার ভয়ে থাকবে ۔
##নিজের একটা সম্পদ থাকা মানে ওই মেয়ের আত্মবিশ্বাস অনেকবেশি বেড়ে যাবে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ,পড়ালেখা করতে ۔আর একটা স্বাবলম্বী শিক্ষিত মেয়ে যে কোন পরিবার বা সমাজের জন্য অনেক বড় একটা সাপোর্ট ۔
#) হিন্দু নারীরা শিক্ষা বলেন ,চাকরি কিংবা উদোক্তা/ব্যাবসায়ী হওয়ার পথে অনেক এগিয়ে যাবে যা আমাদের হিন্দু সমাজের জন্যই মঙ্গল জনক ۔
## একজন নারী স্বাবলম্বী হলে সেই পরিবারের পিতা মাতা ভাই কিংবা স্বামী অর্থনৈতিক ভাবে অনেক হেল্প পাবে ۔ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে গড়ে তুলতে পারবে ۔
### পিতা মাতা কন্যা বিয়ে দিয়ে একটা দুশ্চিন্তায় থাকে যে আমার মেয়েটা ভালো আছে কিনা কিংবা শশুর বাড়ির কেউ নির্যাতন করতেছে কিনা সেই ভয়টা অনেকটাই কমে যাবে ۔কারণ শশুর বাড়ির লোক ও নির্যাতনের সময় ভাববে বিভিন্ন আইনি জটিলতায় আটকাবে বলে ۔
#প্রতিবন্ধী রা আরো বেশি সুবিধা নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকতে পারবে ۔বর্তমানে হিন্দু পারিবারিক আইনে জন্মান্ধ ,বধির ,বোবা ,ক্লীব ,পতিত কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের কেউ পৈতৃক সম্পত্তিতে কোনো অধিকার পাইনা ۔পরিবারের এই সব অবহেলিত সুবিধা বঞ্চিত রা বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন অন্তত পাবে ۔
সুতরাং অসুবিধার চাইতে বেশি সুবিধাই হবে হিন্দু সমাজের ۔আসলে এই আইন সংস্কারে শাস্ত্রের বিধি বিধান নয় তথাকথিত কিছু পুরুষের লোভ আর নারীদের ছোট করে দেখার মানসিকতাই মূল বাধা ۔নারীরা যদি শিক্ষা দীক্ষায়, কর্মে নিজেদের প্রতিষ্টিত করে তাহলে আমাদের দেশের কিছু পুরুষের মনে প্রতিহিংসা জন্ম নেয় ۔কারণ বাপ্ দাদার আমল থেকেই দেখে আসছে মেয়েরা সব সময় পুরুষের কথায় উঠে বসে ,এক পা ও দিতে পারে না অনুমতি ছাড়া ۔দেখতে দেখতে এগুলো মগজে এমন ভাবে গেঁথে গেছে যে ওটা বের করে মেয়েদের কে স্বাধীন ভাবে কোন কিছু করতে দেয়ার চিন্তা ওরা মাথায়ই আনতে পারে না ۔ওদের ভাবনা মেয়েরা ঘরের পুতুল ,ঘরের কাজ করবে ,ভাত রান্না করবে ,সন্তান লালন পালন আর স্বামীর সেবাতেই জীবন পার করবে ۔ঘরের বাইরে যাওয়া ,বেশি পড়ালেখা করলে মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে ,পুরুষদের কথা শুনবে না এটাই ওদের বদ্ধমূল ধারণা ۔আর তাদের এই ধারণায় সাহস যোগায় মূলত বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থের / গুরুদের কিছু বাণী /বিধি বিধান ۔কারণ কোন ধর্মই চায়নি মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে উপরে যাক ,শিক্ষা দীক্ষায় ,নেতৃত্বে মেয়েরা এগিয়ে যাক ۔যার সুযোগ নিয়ে আমাদের পুরুষরা নারীদের উপর বিভিন্ন বিধি নিষেধ চাপিয়ে দিয়ে ওদের দুর্বল করে রাখে ۔
সময় এখন পাল্টেছে ,নারীদের চিন্তা ভাবনায় ও ব্যাপক পরিবর্তন আসছে ۔ওরা এখন বুঝতে শিখেছে কিভাবে পুরুষরা ওদের এগুতে দিচ্ছে না সেটা ۔যার ফলে এখন অনেক হিন্দু নারীরাই বিভিন্ন সেক্টরে পুরুষদের চেয়েও ভালো অবস্থানে আছে ۔ওরা যদি ওই বস্তা পঁচা বিধিনিষেধের জালে আটকে থাকতো তাহলে ওরা আজ এই অবস্থানে আসতে পারতো না ۔
তাই হিন্দু সমাজের নেতৃত্ব দেয়া কিছু লোকের মানসিকতা,দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো টা জরুরি সুন্দর একটা হিন্দু সমাজ গড়তে ۔
#হিন্দু আইন সংস্কার হোক ,বাড়ুক নারীর আত্মবিশ্বাস ,নিরাপদ হোক হিন্দু নারীর ভবিষ্যৎ ۔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_img
spot_img

বাছাইকৃত

বিশেষ নিবন্ধ